বিজ্ঞাপন
ফাহিম আহমদ: ১৮৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো গোলাপগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ি ১ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২১ ফেব্রুয়ারিতে অস্থায়ী শহিদমিনার তৈরি করেই ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানানো হত। কিন্তু এবার স্থায়ী একটি শহিদমিনার পেয়েছে স্কুলটি। এর আগে কলাগাছ, কাপড় ও বাঁশের কঞ্চি দিয়ে অস্থায়ী শহিদমিনার তৈরি করে জানানো হত শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা।
অবশ্য এতো বছর পর বিদ্যালয়টি শহিদমিনার পেলেও উপজেলার অধিকাংশ বিদ্যালয়েই এখনো নেই শহিদমিনার। যার ফলে বেশির ভাগ বিদ্যালয়ে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানান থেকে বঞ্চিত হয় শিক্ষার্থীরা। আর বিকল্প হিসেবে আয়োজন করা হয় আলোচনা সভা।
১৮৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টি ইতিমধ্যে গোলাপগঞ্জ উপজেলায় সুনাম অর্জন করেছে। এত বছর পর শহিদমিনার নির্মিত হওয়ায় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে আনন্দ দেখা দিয়েছে। আর অভিভাবক ও কমিটির সদস্যরা বলছেন, শহিদ মিনার নির্মিত হওয়ার কারণে ২১ শে ফেব্রুয়ারির তাৎপর্য সম্পর্কে জানতে পারবে শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে সরেজমিন নতুন শহিদমিনার নির্মাণ দেখতে গেলে দেখা যায়, শহিদ মিনারটির পিলারগুলো সবুজ রংয়ের টাইলস বেষ্টিত ও মাঝখানে লাল রংয়ের বৃত্ত। সামনে শহীদদের সম্মান জানানোর জন্য বড় করে টাইলস দিয়ে জায়গা রাখা হয়েছে। শহিদ মিনারে উঠার সিঁড়ি গুলোও চুখে পড়ার মত।
প্রতিষ্ঠানের ৫ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘শহিদমিনারে এবার ফুল দিয়ে শহীদদের সম্মান জানানো যাবে। আমরা অনেক খুশি। আমাদের স্কুলে শহিদমিনার হয়েছে।’
প্রাক্তন শিক্ষার্থী জাবেদ আহমদ বলেন, আসলে এই বিদ্যালয়ের একজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী হিসেবে অনেক আনন্দ লাগছে শহিদমিনার দেখে। এখন থেকে ভাষার মাস সম্পর্কে আরও বাড়তি জ্ঞান অর্জন করতে পারবে শিক্ষার্থীরা।
অপরদিকে বিদ্যালয়ে একটি শহিদমিনার স্থাপনে অবদান রাখতে পেরে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, সাংবাদিক আব্দুল আজিজ বলেন, উন্নয়নের দিক থেকে অনেকটা পিছিয়ে ছিলো প্রতিষ্ঠানটি। এই বিদ্যালয়ে আমিও পড়ালেখা করেছি। সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজ করব বলে প্রতিজ্ঞা করি। আর এখন পর্যন্ত অনেক উন্নয়ন করেছি। সেই সাথে উপজেলার শ্রেষ্ঠ একটি বিদ্যালয়ের পরিণত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমি নিজে গর্বিত আমার দায়িত্বে থাকা সময়ে শহিদমিনার করাতে পেরে। আমি চাই উপজেলার প্রতিটি বিদ্যালয়ে এরকম শহিদমিনার হোক। তাতে আমাদের আগামী প্রজন্ম ইতিহাস জানার মধ্যদিয়ে বেড়ে উঠবে।
তিনি বলেন, শহিদ মিনার নির্মাণ করার জন্য সরকার থেকে ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ আসে। এটি নির্মাণ করতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। বাকি টাকা গুলো আমি আমার বন্ধু-বান্ধবদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছি।