বিজ্ঞাপন
বিয়ানীবাজার প্রতিনিধি: অনৈতিক সম্পর্ক দেখে ফেলায় বিয়ানীবাজারের চার বছরের শিশু সোহেল ওরফে সাহেল হত্যার ঘটনায় চাচীর পরকিয়া প্রেমিক নাহিদুল ইসলাম ওরফে ইব্রাহিমের জামিন আবেদন সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আসামির জামিনে আপত্তি না থাকার অভিযোগে মামলার বাদী শিশুটির বাবাকে গ্রেফতার ও তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
জামিনের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো.বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. বশির উল্লাহ এবং আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. আল আমিন।
জানা যায়, গত বছরের ৭ জুন ভোরে শিশুটি চাচির ঘরে গিয়ে নাহিদুল ও সুরমা বেগমের অনৈতিক মেলামেশা দেখে ফেলে। পরে শিশুটিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে গোসলখানায় প্লাস্টিকের ড্রামের মধ্যে কম্বল দিয়ে মুড়িয়ে রাখা হয়। ওইদিন সন্ধ্যায় বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুর লাশ উদ্ধার করে। ওই সময় নাহিদুল ইসলাম ও সুরমা বেগমকে আটক করা হয়। পরদিন শিশুর পিতা খসরু মিয়া মামলা করেন। সুরমা বেগম শিশুটির চাচা রুনু মিয়ার স্ত্রী এবং নাহিদুল চারখাই ইউনিয়নের মধুরচক এলাকার কামাল মিয়ার ছেলে।
এর পরে গত নভেম্বর মাসে নাহিদুল বিচারিক (নিম্ন) আদালতে জামিন আবেদন করেন। ওই জামিন আবেদন খারিজ হওয়ার পর তিনি উচ্চ আদালতে আবেদন করেন।
ড. বশির উল্লাহ জানান, উচ্চ আদালতে আসামিপক্ষে মামলার বাদী শিশুটির পিতার একটি আবেদন দেন। সে আবেদনে বলা হয়- আসামির জামিনে তার (বাদী) কোনো আপত্তি নেই। আদালত এতে ক্ষুব্ধ হন। কারণ এটি একটি হত্যা মামলা। এত কিছুর পরও আসামিকে বাঁচানোর জন্য শিশুর বাবা মামলার বাদী অগ্রগামী হয়েছেন।
তিনি আরও জানান, আদালত তার জামিন আবেদনটি সরাসরি খারিজ করে দিয়ে মামলার বাদী শিশুর বাবা খসরু মিয়াকে গ্রেফতার করে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনী অভিযোগ দায়ের করতে বিয়ানীবাজার থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত বছর ৭ জুন আপন চাচীর অনৈতিক সম্পর্ক দেখে ফেলায় খুন হয় ৪ বছরের শিশু সায়েল আহমদ ওরফে সোহেল। বিয়ানীবাজার উপজেলার কুড়ারবাজার ইউনিয়নের উত্তর আকাখাজনা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে আপন চাচী সুরমা বেগম (৩৮) ও তার পরকিয়া প্রেমিক নাহিদুল ইসলাম (২৬) কে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেছে। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে চাচী ও তার পরকিয়া প্রেমিক শিশু সায়েলকে খুনের বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।