বিজ্ঞাপন
ডেস্ক রিপোর্ট : বন্ধ পাথর কোয়ারি খুলে দেয়ার দাবিতে সিলেটে তিন দিনের ধর্মঘট পালন করছেন বিভাগীয় ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান মালিক ঐক্য পরিষদ। একই সাথে সিলেট থেকে যাত্রীবাহী যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। কেননা তাদের সাথে একাত্মতা জানিয়েছে পরিবহন সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো।
সেজন্য মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) জেলার আঞ্চলিক সড়কগুলোতে স্থানীয়ভাবে চলাচল করা যানবাহনও চলতে দিচ্ছেন না শ্রমিকরা। লাঠি হাতে রাস্তায় অবস্থান নিতে দেখা যায় তাদের। ফলে সিলেট থেকে দেশের সকল রুটের দূরপাল্লার কোনো যানবাহন ছেড়ে যাচ্ছে না, আসছেও না।
ধর্মঘট আহ্বানকারীরা বলছেন, পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকায় সিলেটের ট্রাক মালিকরা গভীর সঙ্কটে পড়েছেন। এছাড়া জাফলং ও গোয়াইনঘাট সড়কে বাস-অটোরিকশার যাত্রীও অনেক কমে গেছে। ফলে সকলেই ক্ষুব্ধ। তাই পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনে সকল পরিবহনের শ্রমিক-মালিকরা সম্পৃক্ত হয়েছেন। মঙ্গলবার থেকে তিনদিন সিলেটে সব ধরনের পরিবহন বন্ধ থাকবে। ফলে মঙ্গলবার সকাল থেকে সিলেটে কোনো প্রকার গণপরিবহণ চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না।
এদিকে স্বল্প পরিসরে চলাচল করা যানবাহন থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দিচ্ছেন পরিবহন শ্রমিকরা। এতে যাত্রী ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। নগরের প্রবেশদ্বার ও কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে শুরু করে বেশিরভাগ সড়কে শ্রমিকদের লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে যানবাহন চলাচলে বাধা সৃষ্টি করতে দেখা যায়। এতে করে সিলেট থেকে হঠাৎ করে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ায় বিপাকে পড়েছেন দূর-দূরান্তের যাত্রীরা।
তারা বলছেন, জনসাধারণকে জিম্মি করে অযৌক্তিক দাবি আদায়ের চেষ্টা করছে পরিবহন শ্রমিকরা। দ্রুত এমন কর্মসূচি প্রত্যাহারের দাবিও তাদের।
এছাড়া সিলেটে সিএনজি অটোরিকশায় গ্রিল সংযোজনে পুলিশের নির্দেশনা প্রত্যাহারসহ ৬ দফা দাবিতে জেলায় সোমবার থেকে ধর্মঘট পালন করছে অটোরিকশা শ্রমিকরা। ধর্মঘটের কারণে সোমবার সিলেটে বন্ধ ছিলো অটোরিকশা চলাচল। এই ধর্মঘট চলবে মঙ্গলবার পর্যন্ত।
টানা এই ধর্মঘটের কারণে বিপাকে পড়েছেন সিলেটের যাত্রীরা। সোমবার অটোরিকশা ধর্মঘটের কারণে নগরের ভেতরে ও নগরের আশপাশের এলাকায় চলাচলকারী যাত্রীদের সবচেয়ে বেশি দূর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, পরিবেশের বিপর্যয় ঠেকাতে ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর সিলেটের জাফলং, ভোলাগঞ্জ, শাহ আরেফিন টিলা, বিছনাকান্দি ও লোভছড়া- এই পাঁচ কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন নিষিদ্ধ করে খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয়। এরআগে ২০১৪ সালে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বেলা)-এর দায়ের করা একটি রিটের প্রেক্ষিতে সিলেটের পাথর কোয়ারিগুলোতে সব ধরণের যন্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে উচ্চ আদালত।
সরকারের নিষেধাজ্ঞার পর কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনের অনুমতি চেয়ে আন্দোলন করে আসছেন পাথর ব্যবসায়ীরা। এবার তাদের সাথে যুক্ত হয়েছেন পরিবহন ব্যবসায়ীরা। একাধিক বিক্ষোভ সমাবেশ করার পর মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার টানা ৭২ ঘন্টার পরিবহন ধর্মঘট ডেকেছেন তারা।