বিজ্ঞাপন
ফাহিম আহমদ : উত্তাল একাত্তরের ২৫ ও ২৬ অক্টোবরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী গোলাপগঞ্জের সুন্দিশাইল মোকাম টিলায় গণহত্যা চালায়। এটি উপজেলার সবচেয়ে বড় গণহত্যা। এতে প্রাণ হারান ২৩ জন। এরমধ্যে ২০ জনের নাম, ঠিকানা পাওয়া গেলেও বাকি ৩ জনের পরিচয় এখনো পাওয়া সম্ভব হয়নি। এরপর শহীদদের স্মরণে ১৯৭৮ সালে এখানে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়।
তবে গত বছর স্মৃতিসৌধে ফুল দেয়া নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ বাঁধে। এরপর রাতের আধারে কে বা কারা স্মৃতিসৌধের দেয়াল ভেঙে ফেলে। এ নিয়ে আদালতে মামলাও চলছে। তবে সবকিছু চলমান থাকলেও থমকে আছে সংস্কার। ভাঙা স্থানগুলো গত ১ বছরেও সংস্কার করা হয়নি।
মঙ্গলবার সরেজমিন সুন্দিশাইলে অবস্থিত স্মৃতি সৌধ ঘুরে দেখা যায়, অনেকটা অরক্ষিতভাবে পড়ে আছে স্মৃতিসৌধটি। স্মৃতিসৌধের চারপাশে ছোট করে সীমানা প্রাচীর হলেও বাউন্ডারির টাইলস এখনও ভাঙা। বাউন্ডারির ভিতরে গাছের পাতা আর ময়লা-আবর্জনার স্তূপ।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, স্মৃতিসৌধ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আলাদা করে কোন মানুষ রাখা হয়নি। এভাবে অবহেলায় পড়ে থাকে সব সময়। কোন দিবস আসলে এটি পরিষ্কার করে ফুল দেওয়া হয়। দিবস শেষে আবারও আগের মত হয়ে যায়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ কামরান হোসেন বলেন, গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর দুপুর ১২ টার দিকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শহীদের স্মরণে ফুল দিতে আসলে বিএনপি জামাতের কয়েকজন আমাদের উপর হামলা করে। এরপর তারা রাতের আঁধারে স্মৃতিসৌধের বাউন্ডারি ওয়াল ভাংচুর করে। এ বিষয়ে আদালতে মামলা রয়েছে।
গোলাপগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার সফিকুর রহমান বলেন, স্মৃতিসৌধ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আলাদা কোন মানুষ রাখা হয় না। কয়েকদিন পরপর আমি মানুষ দিয়ে স্মৃতিসৌধে জমা হওয়া আবর্জনা পরিষ্কার করাই।
ভাংচুরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত বছর বিজয় দিবসে ফুল দেওয়া নিয়ে সংঘর্ষ হয়। পরে কে বা কারা বাউন্ডারি ভাংচুর করে। মামলা হওয়ার কারণে এখন পর্যন্ত ভাংচুর হওয়া জায়গা মেরামত করা হয়নি।
এ বিষয়ে গোলাপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রহমান বলেন, এটা দেখাশোনার জন্য আলাদা কোন মানুষ নেই। প্রতি বছর শহিদদের স্মরণে এখানে সম্মান জানানো হয়। এবছরও হবে।
স্মৃতিসৌধের বাউন্ডারি দেয়াল ভাংচুরের বিষয়ে তিনি বলেন, মেরামতের বিষয়টি উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার সাহেব দেখবেন।
কিভাবে এটা ভাংচুর হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে মামলার কপিতে উনি হামলার দিন জায়গা পরিদর্শন করেছেন বলে উল্লেখ আছে।