Advertisement (Custom)

বিজ্ঞাপন
প্রকাশিত: রবিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১
সর্বশেষ সংষ্করণ 2021-12-23T17:35:39Z
জানা-অজানাহবিগঞ্জ

হবিগঞ্জের ৫০০ বছরের প্রাচীন শংকরপাশা মসজিদ

বিজ্ঞাপন
      

ডেস্ক রিপোর্ট : সিলেট বিভাগে ঐতিহাসিক তথ্য-উপাত্ত ও প্রাচীন স্থাপত্যসমৃদ্ধ হবিগঞ্জ জেলা। হবিগঞ্জ সদর উপজেলার রাজিউড়া ইউনিয়নের শংকরপাশা গ্রামে অবস্থিত উচাইল শংকরপাশা শাহি জামে মসজিদ।  

হবিগঞ্জ জেলায় অবস্থিত পঞ্চদশ শতাব্দীতে নির্মিত প্রাচীন স্থাপত্যের একটি মসজিদ। 

এই মসজিদ গাত্রে উৎকীর্ণ শিলালিপির তথ্যে জানা যায়, সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মজলিশ আমিন ১৫১৩ সালে এটির নির্মাণকাজ সমাপ্ত করেন। এ মসজিদের পাশেই তার সমাধি রয়েছে।  

কালের বিবর্তনে একসময় মসজিদসংলগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকা ঘন অরণ্য ভূমিতে পরিণত হয়। পরবর্তীকালে জঙ্গলবেষ্টিত এ এলাকায় জনবসতি গড়ে ওঠার প্রাক্কালে আবারও জনসম্মুখে আসে এ মসজিদটি। 

তথ্যে জানা যায়, এ মসজিদ ভবনটি একটি একচালা ভবন, যার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ একই পরিমাপের। যার দৈর্ঘ্য সাড়ে ২১ ফুট এবং প্রস্থও সাড়ে ২১ ফুট। 

এর সম্মুখের বারান্দাটির প্রস্থ তিন ফুটের একটু বেশি এবং এতে চারটি গম্বুজ রয়েছে। এই মূল ভবনের মধ্যভাগে একটি বিশাল গম্বুজ এবং বারান্দার ওপর রয়েছে তিনটি ছোট গম্বুজ।  

মসজিদটিতে ১৫টি দরজা ও জানালা রয়েছে, যা পরস্পর একই আকৃতির। উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ— এই তিন দিকের দেয়ালের পুরুত্ব প্রায় পাঁচ ফুট এবং পশ্চিমের দেয়ালটি প্রায় ১০ ফুট। এতে মোট ছয়টি কারুকার্য শোভিত স্তম্ভ রয়েছে। প্রধান কক্ষের চারকোণে ও বারান্দার দুই কোণে অবস্থিত। ওপরের ছাদ আর প্রধান প্রাচীরের কার্নিশ ধনুক আকৃতির বাঁকানোভাবে নির্মিত।  

মসজিদের দক্ষিণ পাশে একটি বড় দীঘি রয়েছে। মধ্যযুগীয় স্থাপত্যশিল্পের অন্যতম নিদর্শন হবিগঞ্জের উচাইল শংকরপাশা শাহি মসজিদ। মসজিদটি সুলতানি আমলের স্থাপত্য নিদর্শনের চিহ্ন বহন করে। হবিগঞ্জ সদর উপজেলার অন্তর্গত উচাইল নামক গ্রামে ছোট্ট একটি টিলার ওপর প্রায় ছয় একর ভূমির ওপর কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে মসজিদটি। 

জানা যায়, অত্যন্ত চমৎকার ও মনোমুগ্ধকর কারুকাজসমৃদ্ধ মসজিদটির দৃষ্টিনন্দন নির্মাণশৈলী দেখার মতো। পোড়া মাটির তৈরি নান্দনিক কারুকার্য ও অসাধারণ নির্মাণশৈলী আধুনিকতাকে হার মানায়। এসব পোড়ামাটির নকশা কাটা ফলক ইমারতের দেয়ালে সাঁটানো হয়েছে।  

দেয়ালের বহিরাংশে পোড়ামাটির বিভিন্ন নকশা এবং অলঙ্করণ সহজেই দর্শনার্থীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে। পোড়ামাটির নকশা আঁকা মসজিদটি দৃশ্যত লাল বা রক্তিম বর্ণের হওয়ায় লোকজন এটিকে ‘লাল মসজিদ’ বলে থাকেন।  

আবার এটির অবস্থান একটি টিলাশৃঙ্গে। এ দুই বৈশিষ্ট্যের সংমিশ্রণে মসজিদটিকে ‘লালটিলা মসজিদ’ও বলা হয়। 

এ মসজিদটি পুনঃআবির্ভূত হওয়ায় অনেকেই এটিকে গায়েবি মসজিদও বলে থাকেন। স্থানীয় লোকজন জানান, প্রাচীন এ মসজিদটির রক্ষণাবেক্ষণের সব দায়িত্ব সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের হাতে রয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত কোনো প্রকার কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

বিজ্ঞাপন

জনপ্রিয় সংবাদ