বিজ্ঞাপন
ফাহিম আহমদ: দিনরাত টুং টাং শব্দে মুখরিত থাকতো গোলাপগঞ্জের কামারপট্টি।
কামার শিল্পীরা ব্যস্ত থাকতেন দা, বটি, কুড়াল, ছুরি, চাপাতিসহ ধারালো জিনিস তৈরিতে। কিন্তু করোনা আসার পর থেকে গোলাপগঞ্জের কামারপট্টিতে নেই টুং টাং শব্দ।
বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে লকডাউনে গত দুই মাস থেকে কর্মহীন থাকায় অনেকটা মানবেতর জীবনযাপন করছেন গোলাপগঞ্জের কামার শিল্পীরা।
করোনার করুণ দশায় অসহায় হয়ে পড়েছেন তারা। প্রতিদিন যা আয় হতো তা দিয়ে ৭/৮ জনের একেকটি পরিবার কোন রকম চলতো। এখন আর সেই আয়টুকুও নেই। এতে পরিবার নিয়ে অনেকটা বিপাকে তারা।
গত (১০মে) থেকে সরকারের নির্দেশনা মতে আবারও দোকানে গিয়ে তারা কাজ শুরু করেছেন। কাজ শুরু করলেও আগের মত আয় নেই।
অসহায় হয়ে পড়া এই সব কামার শিল্পীরা সরকারি সহায়তা থেকে বঞ্চিত। এখন পর্যন্ত সরকারি কোন সহায়তা বা উপজেলা থেকেও কোন সহায়তা পান নি তারা। প্রথম প্রথম পৌর মেয়রের দেওয়া ত্রাণ সামগ্রী পেলেও গত কয়েকদিন থেকে এসবও আর তারা পাচ্ছেন না।
সরেজমিন সোমবার (১৭ মে) দুপুরে গোলাপগঞ্জ বাজারের কামারপট্টিতে গিয়ে দেখা যায়। দা, বটি, ছুড়ির পসরা সাজিয়ে কামারেরা বসে থাকলেও ক্রেতা না থাকায় এসব বিক্রি হচ্ছে না।
রিপন মালাকার নামে একজন কামার জানান, করোনা আসার পর থেকে আমাদের ব্যবসা একেবারে কমে গেছে। ক্রেতারা না আসায় জিনিস পত্র বিক্রি হচ্ছে না। এত প্রতিদিন কোন রকম আয় হচ্ছে। যা দিয়ে পরিবার চালানো কষ্টদায়ক হয়ে পড়েছে।
মন্টু মালাকার নামে আরেকজন কামার শিল্পী বলেন, করোনার আগে প্রতিদিন ১০০০/১২০০ টাকা আয় হতো। যা দিয়ে ভালভাবে সংসার চলতো। এখনতো প্রতিদিন ১০০/২০০ টাকাও আয় হয় না। অনেকদিন একেবারে খালি থাকি। এ অবস্থায় আমাদের চলাফেরা কঠিন হয়ে পড়েছে।
উপজেলার বেশ কয়েকজন কামার তারা সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন যে, এই কঠিন পরিস্থিতিতে তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। এই পরিস্থিতি যত বাড়বে না খেয়ে মরতে হবে বলে জানান তারা।
পৌর মেয়র আমিনুল ইসলাম রাবেল বলেন,
করোনার এই কঠিন পরিস্থিতিতে আমরা পৌরসভার সকল অসহায়দের সহযোগিতা করেছি। আমরা ধাপে ধাপে অসহায়দেরকে সহযোগিতা করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, কাজ না থাকায় কামার শিল্পীরা কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। আমরা তাদেরকে ওএমএস এর কার্ড দিয়েছি। যেখান থেকে তারা ১০ টাকা কেজি দরে ২০ কেজি করে চাল কিনতে পারবেন। আমাদের সহযোগিতা তাদের প্রতি থাকবে।