বিজ্ঞাপন
মুফতি মেরাজ তাহসীন:: করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যাক্তিকে গোসল, কাফন-দাফন ও জানাযার হুকুম কি? অনেক লাশের ক্ষেত্রে এমন ঘটছে যে, সংক্রমনের আশংকায় গোসল বা জানাজা ব্যাতিত লাশ দাফন করা হচ্ছে৷ এ ক্ষেত্রে শরীয়তের বিধান কি? জানিয়ে বাধিত করবেন৷
ইসলামি শরিয়ত অনুযায়ী কোনো মুসলিম ব্যাক্তি মৃত্যু বরণ করলে তাকে গোসল দেওয়া, সম্মানজনকভাবে কাফন-দাফন করা এবং তার জানাজার নামাজ পড়া ফরজে কেফায়া ৷ অর্থাৎ সমাজের একদল লোক তা আদায় করলে সকলের পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যাবে ৷ অন্যথায় সবাই গুনাহগার হবে ৷
ইবনে আব্বাস থেকে বর্নিত তিন বলেন একদা আরাফার দিন একলোক উট থেকে পরে মারা গেল ৷ রাসূল সা. বললেন তোমরা তাকে বরই পাতার পানি দিয়ে গোসল দাও এবং দুই কাপড়ে কাফন দাও৷ সহিহ বুখারি-১২১৮ ৷
আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্নিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. এর নিকট জানাজার জন্য কোনো এমন মৃত ব্যক্তিকে আনা হলে যার উপর ঋণ আছে ৷ তিনি জিজ্ঞাসা করতেন, সে কি ঋণ পরিশোধের কিছু রেখে গেছে? যদি বলা হত রেখে গেছে, তাহলে তিনি নামায পড়তেন ৷ অন্যথায় মুসলমানদেরকে বলতেন, তোমরা তোমাদের সাথির জানাযা পড়ো৷ সহিহ বুখারি-২২৯৮; সহিহ মুসলিম-১৬১৯ ৷
করোনা ভাইরাসে মৃত ব্যক্তিকেও গোসল, কাফন-দাফন ও জানাজার নামাজ আদায় করে সম্মানজনক ভাবে কবরস্থ করা আবশ্যক ৷ প্রয়োজনে পুর্ণ সতর্কতা অবলম্বন, গোসল দাতার পুর্ণ শরীর ঢেকে মাস্ক, গ্লাভস পরে ৷ বা দূর থেকে পানি স্প্রে করে হলেও গোসল দিতে হবে ৷
তবে যদি সংক্রমের প্রবল আশংকা হয় ৷ কোনোভাবেই গোসল দেয়া সম্ভব না হয় ৷ এমনকি পানি স্প্রে করেও সম্ভব না হয় ৷ তাহলে তায়াম্মুম করিয়ে দিবে ৷ অর্থাৎ দুই হাত মাটিতে মেরে মৃতের চেহারা ও দু হাত মাসাহ করে দিবে ৷ এমতাবস্থায় হাতে গ্লাভসও ব্যবহার করতে পারবে ৷
গোসল-তায়াম্মুম সর্বাত্তক চেষ্টা করার পরও যদি সম্ভব না হয় তাহলে গোসল-তাইমুম ব্যতিত জানাজা পড়ে দাফন করে দিলে আশা করা যায় গুনাহ হবে না ৷ কেননা আল্লাহ তায়া ইরশাদ করেন, لا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْساً إِلَّا وُسْعَهَا
অর্থাৎ আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যের বাইরে কোনো কাজ চাপিয়ে দেন না। সূরা বাকারা-২৮৬ ৷ অনত্রে বলেন, فَاتَّقُوا اللَّهَ مَا اسْتَطَعْتُمْ
অর্থাৎ তোমরা আল্লাহকে তোমাদের সাধ্য মোতাবেক ভয় কর ৷ সূরা তাগাবুন-১৬ ৷