Advertisement (Custom)

বিজ্ঞাপন
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৭ মার্চ, ২০২০
সর্বশেষ সংষ্করণ 2020-03-17T16:26:31Z
সিলেট

সিলেটে নেই করোনাভাইরাস শনাক্ত করার সরঞ্জাম

বিজ্ঞাপন


জিভি২৪ নিউজঃ সিলেট করোনাভাইরাস শনাক্ত করার সরঞ্জাম নেই। প্রবাসী অধ্যুষিত আর সীমান্তবর্তী এলাকা হচ্ছে সিলেট। তাই সিলেটকে করোনাভাইরাস (কোভিড-19) সংক্রমণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষজ্ঞরা মতে ঝুঁকিতে থাকলেও সিলেটে নেই করোনাভাইরাস শনাক্তের কোনও ব্যবস্থা। এই ভাইরাস সনাক্তের জন্য যে কিট প্রয়োজন তা নেই সিলেটের হাসপাতাল ও প্যাথলজিক্যাল সেন্টারগুলোতে। তাই সিলেটে সন্দেহভাজন রোগী এলে তাদের রক্তের নমুনা পাঠাতে হয় ঢাকায়। ফলে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে তা মোকাবিলা কঠিন হবে বলে মনে করছেন অনেকেই।

সিলেট সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশে কেবল রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউট (আইইডিসিআর)-এ করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করার ব্যবস্থা রয়েছে। ফলে সিলেটে সন্দেহভাজন কাউকে পেলে রক্তের নমুনা পাঠানো হয় ওই প্রতিষ্ঠানে। তারা পরীক্ষা করে জানান ওই রোগীর শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি রয়েছে কি-না।

সিলেটের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলেছেন, সিলেটের শহীদ ডা. শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে আইসোলেশন সেন্টার খোলা হয়েছে। তবে ঢাকার বাইরে বাংলাদেশের কোনও জেলায় করোনাভাইরাসের চিকিৎসা ও পরীক্ষার সুযোগ নেই।

করোনাভাইরাস পরীক্ষায় যে কিটের প্রয়োজন তা সিলেটে নেই। কিটের চাহিদাপত্র পাঠানোর বিষয়ে এখনও কোনও নির্দেশনা বা সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। তবে সময়মত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করবে বলে জানান সিলেটের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।

এদিকে করোনাভাইরাসের ঝুঁকিতে থাকা সিলেটে শনাক্তের কোনও ব্যবস্থা না থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সিলেটের সচেতন সমাজ। তারা মনে করছেন যেকোনো মুহূর্তে সিলেটের করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে সমস্যার মুখে পড়তে হবে ভাইরাসে আক্রান্তদের। একইসঙ্গে রোগী সামলাতে স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের হিমশিম খেতে হতে পারেও ধারণা করছেন তারা।

সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন সিলেটে জ্বর, শ্বাসকষ্ট, কাশি ও সর্দি নিয়ে ১০ থেকে ১৫ জন রোগী এই হাসপাতালে আসেন চিকিৎসা নিতে ও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কি-না তা পরীক্ষা করাতে। তাদের মধ্য থেকে চিকিৎসকরা যাদের সন্দেহভাজন করোনায় আক্রান্ত মনে করেন তাদেরকে আইসোলেশন সেন্টারে ভর্তি রেখে আইইডিসিআরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরে তাদের রক্তের স্যাম্পল কালেকশন করে ঢাকায় পাঠিয়ে সেখান থেকে রিপোর্ট করিয়ে এনে চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

এ ব্যাপারে সিলেট শহীদ ডা. শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. সুশান্ত কুমার মহাপাত্র বলেন, শহীদ ডা. শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে ১০০ বেডের করোনা আইসোলেশন সেন্টার খোলা হয়েছে। এখানে করোনাভাইরাসে সন্দেহজনক রোগী মিললে প্রথমে তাকে নির্দিষ্ট ইউনিটে পাঠানো হয়। পরে চিকিৎসকরা রোগীর শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন। পরীক্ষার নিরীক্ষার প্রয়োজন মনে হলে আইইডিসিআরকে জানানো হয়। তাদের সিলেটে থাকা প্রতিনিধিরা রোগীর রক্ত সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠান। পরে তারা করোনার বিষয়টি আমাদের নিশ্চিত করেন। করোনার প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য সিলেটে প্রস্তুতি রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, করোনা সন্দেহে যারা সিলেটের আইসোলেশন সেন্টারে ভর্তি আছেন তাদের কারো শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। সর্বশেষ গত শনিবার ও রোববার দুইজনকে আইসোলেশন সেন্টারে ভর্তি করা হয়। তাদের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নেই এবং তারা দুজনেই ভালো আছেন। এছাড়া আইইডিসিআর’র পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আমাদের করোনাভাইরাসের চিকিৎসা সম্পর্কে দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন।

এদিকে সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ মণ্ডল জানান, ঢাকার বাইরে দেশের অন্য কোনও জেলায় করোনাভাইরাস পরীক্ষার কিটের সরবরাহ নেই। আইইডিসিআরের নির্দেশনা ও প্রয়োজন মনে হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে কিটের চাহিদাপত্র পাঠানো হবে। তবে এ ব্যাপারে এখনো কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। সিলেটে এখনো পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোনও রোগী মেলেনি। সন্দেহজনক কোনও রোগীর তথ্য পেলে তা আইইডিসিআরে জানানো হয়। তারা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে আমাদের কাছে রিপোর্ট পাঠালে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করি।

এদিকে প্রতিদিন যুক্তরাজ্যসহ করোনা আক্রান্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সিলেটে আসছেন অনেক প্রবাসী। ওসমানি আন্তর্জাতিক বিমান বন্ধরে থার্মাল স্ক্যানারে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয় কিন্তু এ বিষয়ে আইইডিসিআর হোম কোয়ারেন্টিনের থাকার কথা থাকলেও অনেকে ঘুরে বেড়াচ্ছেন প্রকাশ্য।

বিজ্ঞাপন

জনপ্রিয় সংবাদ